রাজা রামমোহন রায়ের জীবনী রচনা

রামমোহন রায় জন্মগ্রহণ করেন ২১ মে, ১৮৩৬ সালে, মুকুলবা দেয়াড়ি, বর্তমান বাংলাদেশে। তার পিতা রামকৃষ্ণ রায় ছিলেন একজন শ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ, যার প্রভাবে..

তোমরা যারা যারা রাজা রামমোহন রায়ের জীবন কাহিনী সম্পর্কে একটি জীবনী লিখতে চাইছো তারা এটি লেখে নাও

রাজা রামমোহন রায়

ভূমিকাঃ রাজা রামমোহন রায় ছিলেন প্রথম ভারতীয় ধর্মীয়-সামাজিক পুনর্গঠন আন্দোলন ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা এবং বাঙালি দার্শনিক। তৎকালীন রাজনীতি, জনপ্রশাসন, ধর্মীয় এবং শিক্ষাক্ষেত্রে রাজা রামমোহন রায়ের উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখতে পেরেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকে ‘ভারতপথিক’ এবং দিলীপ কুমার বিশ্বাস তাকে ‘বিশ্বপথিক’ বলে অভিহিত করেন।

জন্ম পরিচয়ঃ ১৭৭২ সালের ২২শে মে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে একটি সাধারণ ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতার নাম রমাকান্ত রায় এবং মাতার নাম তারিণী দেবী।

শিক্ষাজীবনঃ ছোটোবেলা থেকেই রামমোহন রায়ের লেখাপড়ায় প্রবল আগ্রহ ছিল। তিনি ৮ বছর বয়সেই গ্রামের স্কুলে বাংলা এবং আরবি ভাষা শিখতে শুরু করেন। তারপর পাটনায় গিয়ে আরবি ও ফার্সি দুটো ভাষাতেই তিনি দক্ষতা অর্জন করেন। ১২ বছর বয়সে তিনি সংস্কৃত ভাষা শেখার জন্য কাশীধামে চলে যান এবং ৪ বছর সেখানে থেকে পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি বেদান্ত শাস্ত্রের উপরেও গবেষণা করেছিলেন।

ধর্মজীবনঃ তিনি শিক্ষাজীবন শেষ করার পর রংপুরের ডেপুটি কালেক্টর ডেকারি সাহেবের আমন্ত্রণে একটি উচ্চপদস্থ চাকরি গ্রহণ করেন। কিন্তু রামমোহন এই চাকরি বেশিদিন করেননি। তিনি সাহিত্য সাধনা ও সমাজ সংস্কারমূলক কাজের জন্য চাকরি ছেড়ে দিয়ে কলকাতার মানিকতলা এলাকায় আত্মীয়সভা নামে একটি সংঘ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

ব্রাহ্ম সমাজ প্রতিষ্ঠাঃ ১৮২৪ সালে তিনি ধর্ম সমালোচনামূলক প্রতিষ্ঠান ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বেদে বর্ণিত অদ্বিতীয় ব্রহ্মের উল্লেখ করে প্রচার করেন যে, ঈশ্বর এক এবং অদ্বিতীয়।

সমাজ সংস্কারকঃ জাতির নবনজীবনে এক দরদী বাস্তববাদী সংস্কারক রূপে রামমোহন রায় অস্পৃশ্যতা, বর্ণপ্রথা, সতীদাহপ্রথা, বাল্যবিবাহ, গঙ্গাসাগরে সন্তান বিসর্জন ইত্যাদির তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন। রামমোহনের ঐকান্তিক চেষ্টায় ১৮২৯ সালে ‘রেগুলেশন XVI’ আইন দ্বারা সতীদাহপ্রথা নিষিদ্ধ করা হয়।

উপসংহারঃ মোগল সম্রাট দ্বিতীয় আকবর রামমোহন রায়কে ‘রাজা’ উপাধিতে ভূষিত করে মোগল সম্রাটের দূত হিসাবে যুক্তরাজ্যে নিয়োগ করেন। সেখানেই ১৮৩৩ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের ‘ব্রিস্টল’ শহরে তার জীবনবাতি নির্বাপিত হয়।

Post a Comment

Leave your thoughts in the comments, and we will reply to you very soon!