কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপর একটি প্রবন্ধ রচনা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন, সাহিত্যকর্ম, এবং 'গীতাঞ্জলি' সহ জাতীয় সংগীতের অবদান জানতে এই প্রবন্ধ রচনা মনোযোগ সহ পড়ুন ।

তোমরা যারা যারা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপর একটি প্রবন্ধ রচনা লিখতে চাইছো তারা এটি লিখে নাও

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ভূমিকাঃ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম স্তম্ভ এবং বিশ্বসাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি ছিলেন কবি, সংগীতজ্ঞ, নাট্যকার, এবং দার্শনিক—এক বহুমুখী প্রতিভার প্রতীক। তার রচিত সৃষ্টিগুলো শুধু সাহিত্যিক নয়, মানবিক চেতনাকে গভীরভাবে ছুঁয়ে গেছে।

জন্ম ও পরিবার পরিচিতিঃ
১৮৬১ সালের ৭ই মে, কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে রবীন্দ্রনাথ জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মাতা শারদা দেবী। সাহিত্যিক পরিবেশে বড় হয়ে ওঠা রবীন্দ্রনাথ শৈশব থেকেই সৃষ্টিশীলতার প্রতি আকৃষ্ট হন।

শিক্ষাজীবনঃ
স্কুলে তার পড়াশোনা ভালো লাগেনি বলে বাড়িতেই তিনি পড়াশোনা শুরু করেন। পরে তিনি লন্ডনে আইন পড়তে যান, কিন্তু সাহিত্য ও শিল্পের প্রতি আগ্রহের কারণে তিনি আইন ছেড়ে লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেন। এই পরিবর্তন তার ভবিষ্যতের দিক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সাহিত্যকর্ম ও নোবেল পুরস্কারঃ
রবীন্দ্রনাথ গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার অন্যান্য বিখ্যাত রচনা যেমন ঘরে বাইরে, গোরা, এবং চোখের বালি আজও পাঠকদের মুগ্ধ করে। তার সংগীত রচনার মধ্যে ‘জন গণ মন’ এবং ‘আমার সোনার বাংলা’ জাতীয় সংগীত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।

শান্তিনিকেতন ও বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠাঃ
তিনি শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে ভারতীয় ঐতিহ্যের সমন্বয় ঘটেছে। পরবর্তীতে, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে তিনি শিক্ষা ক্ষেত্রে এক নতুন দিশা দেখিয়েছেন।

দার্শনিক ভাবনাঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রকৃতির প্রতি অনুরক্ত ছিলেন এবং জীবনের সহজ সৌন্দর্যকে লালন করতেন। তার লেখা ‘সভ্যতার সংকট’ প্রবন্ধে তিনি আধুনিকতার সীমাবদ্ধতা তুলে ধরেছেন।

সংগীত ও চিত্রকলাঃ
রবীন্দ্রনাথ ২০০০ টিরও বেশি গান রচনা করেন যেগুলো আজ রবীন্দ্রসঙ্গীত নামে পরিচিত। বয়সের শেষ দিকে তিনি চিত্রকলা শুরু করেন এবং এই ক্ষেত্রেও অসাধারণ প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন।

পল্লী উন্নয়ন ও সমাজসেবাঃ শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি পল্লী উন্নয়নে মনোনিবেশ করেন। কৃষি শিক্ষা এবং সমাজকল্যাণে তার উদ্যোগ ছিল অসামান্য। তার পল্লী উন্নয়নের ধারণা আজও প্রাসঙ্গিক।

উপসংহারঃ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৪১ সালের সাতই আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। তার সৃষ্টি আজও বিশ্বজুড়ে কোটি মানুষের কাছে প্রেরণার উৎস। তার জীবন ও কর্ম ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে।

Post a Comment

Leave your thoughts in the comments, and we will reply to you very soon!