দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান
“সভ্যতা ধরেছে আগেই বিজ্ঞানের হাত
রাত তাই দিন হল, দিন হল রাত”- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ভূমিকাঃ
বর্তমান যুগকে বলা হয় আধুনিক বিজ্ঞানের যুগ। নিশ্বাস - প্রশ্বাসের মতোই বিজ্ঞান আমাদের কাছে অপরিহার্য। আমাদের দৈনন্দিন জীবন বিজ্ঞান ছাড়া কল্পনাও করা যায় না। এখন যেকোনো ধরনের জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত মানুষই বিজ্ঞানের ওপর নির্ভরশীল সকালে ঘুম থেকে উঠা থেকে শুরু করে, রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত যাবতীয় কাজকর্মের জন্য বিজ্ঞানের অবদান লক্ষনীয়।
বিজ্ঞানের জয়যাত্রাঃ
আদিম মানুষের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ছিল আগুন জ্বালাতে শেখা মানুষের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ন আবিষ্কার চাকা। বর্তমানে মানুষ যোগাযোগের ক্ষেত্রে যে অপরিসীম উন্নতি করেছে তার মূলে রয়েছে এই চাকা। আর যে আবিষ্কারের সুবাদে মানুষ অসাধ্য সাধন করতে পেরেছে তা হল বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষ অনেক নিত্যনতুন জিনিস আবিষ্কার করতে লাগল ! দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের অবদান একে একে স্থান করে নিল ।
প্রত্যাহিক জীবনে বিজ্ঞানঃ
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত প্রায় প্রতিটি জিনিস বিজ্ঞানের দান বাড়ি তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস, যেমন রড, সিমেন্ট, রঙ বা বাড়িতে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি যেমন - পাখা, লাইট, টিভি, ফোন, হিটার, কুকার ইত্যাদি সবকিছুর মূলে রয়েছে বিজ্ঞান। এইসব যন্ত্রপাতি আধুনিক জীবনকে সহজতর করে তুলেছে।
চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞানঃ
চিকিৎসাক্ষেত্রেও বিজ্ঞান কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে। আগে যেসব রোগে মানুষ মারা যেত, এখন সে সমস্ত রোগের ওষুধ আবিষ্কার হওয়ার ফলে মানুষের গড় আয়ু অনেক বেড়ে গেছে ৷ তাছাড়া বিভিন্ন রকম যন্ত্রপাতি আবিষ্কারের ফলে রোগ নির্ণয় করাও সহজ হয়েছে ।
কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে বিজ্ঞানঃ
উচ্চফলনশীল বীজ, রাসায়নিক সার, কীটনাশক এবং অত্যাধিক যন্ত্রপাতি আবিষ্কার হওয়ার ফলে কৃষিক্ষেত্রে আমুল পরিবর্তন এসেছে। শিল্প কারখানায় উন্নতমানের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে কম খরচে বেশি পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে ।
শিক্ষাক্ষেত্রে বিজ্ঞানঃ
বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে শিক্ষা ব্যবস্থাতেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। পাঠদানের ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার করে সাধারন ক্লাসরুমকে স্মার্ট ক্লাস রুম করা হচ্ছে। ইন্টারনেট ব্যবস্থার উন্নতির ফলে এখন ছাত্রছাত্রীদের ঘরে বসে অনলাইন কোচিং দিতে পারছে। অনলাইন টেস্টও নিতে পারছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিঃ
বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে পাল্লা দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থাতেও চরম উন্নতি সাধিত হয়েছে। পৃথিবীর যে- কোনো স্থানে পৌঁছাতে হলে মানুষের কাছে দূরত্বটা আর কোনো বাধা নয়। তাছাড়া, মানুষের তৈরী রকেট এখন গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে পাড়ি দিচ্ছে।
তথ্য আদান- প্রদানের ক্ষেত্রেও বিজ্ঞান আজ সাফল্যের চরম শিখরে পৌঁছে গেছে। চিঠি, টেলি- ফোনের যুগ পেরিয়ে আমরা আজ পৌঁছে গেছি স্মার্ট ফোনের যুগে। হাতে থাকা স্মার্ট ফোন মানুষকে বিশ্বের সাথে যুক্ত করেছে।
বিনোদনের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানঃ
আনন্দে- বিনোদনে বিজ্ঞান একটা অফুরন্ত জোয়ার এনে দিয়েছে। আনন্দ বিনোদনের নানান সামগ্রী যেমন-ভিডিও গেম, টিভি, মিউজিক সিস্টেম ইত্যাদি সবকিছুই বিজ্ঞানের দাম।
উপসংহারঃ
বর্তমান যুগে মানুষ বিজ্ঞানের আশীর্বাদে মানুষ জীবনকে করেছে আরামপ্রদ ও সুন্দর। বিজ্ঞান দৈনন্দিন জীবনে আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। বিজ্ঞান আজ মানুষের বন্ধু, সহযোগী, সেবক দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান আমাদের নিত্য সেবা করে চলেছে। একথা ভাবলে শিউরে উঠতে হয় যে , বিজ্ঞান না থাকলে এই গতিময় বিশ্বে আমরা বাঁচবো কী করে !