একটি প্রাচীন বটগাছের আত্মকথা

এক প্রাচীন বটগাছের আত্মকথায় ফুটে উঠেছে সময়ের পরিবর্তন, মানুষের উপস্থিতি ও গাছটির দীর্ঘ ইতিহাসের বর্ণনা, পড়ুন আমাদের এই পোস্ট।

একটি প্রাচীন বটগাছের আত্মকথা

আমার জন্মঃ

বহু যুগ আগে, আমি একটি ছোট্ট চারা হিসেবে জন্ম নিয়েছিলাম, এক নদীর ধারে। আমার বীজ বহন করে এনেছিল কোনো পাখি, হয়তো। প্রথমে আমি ছিলাম খুবই দুর্বল, কিন্তু আমার মধ্যে ছিল অসীম জীবনীশক্তি।

শিকড়ের বিস্তার ও দৃঢ়তাঃ

ধীরে ধীরে আমার শিকড় মাটি ভেদ করে অনেক গভীরে প্রবেশ করলো। আমার শরীর বাড়তে লাগলো, ডালপালা ছড়াতে লাগলো চারিদিকে। আমার ঝুরি নামতে শুরু করলো, যা পরে শক্ত কাণ্ডে পরিণত হলো।

বহু যুগের সাক্ষীঃ

আমি দেখেছি কত সাম্রাজ্যের উত্থান পতন, কত নদীর গতি পরিবর্তন। কত মানুষ এসেছে আমার ছায়ায় বিশ্রাম নিতে, কত পশু-পাখি আশ্রয় নিয়েছে আমার ডালে। আমি যেন কালের সাক্ষী।

ঝড়-ঝঞ্ঝা ও প্রতিকূলতাঃ

বহু ঝড়-ঝঞ্ঝা আমার উপর দিয়ে বয়ে গেছে। বজ্রপাতে আমার ডালপালা ভেঙেছে, কিন্তু আমি কখনও হার মানিনি। আমার দৃঢ়তা আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।

মানুষের আনাগোনা ও স্মৃতিঃ

কত যুগ ধরে মানুষ আমার কাছে এসেছে। কেউ এসেছে বিশ্রাম নিতে, কেউ এসেছে পূজা করতে, কেউ বা শুধু আমার বিশালতা দেখতে। তাদের কত হাসি-কান্না, কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে আমার সাথে।

পাখিদের কলকাকলি ও আশ্রয়ঃ

আমার ডালে কত পাখি বাসা বেঁধেছে, তাদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে থাকে আমার চারপাশ। আমি তাদের আশ্রয়, তাদের নিরাপদ স্থান।

প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশঃ

আমি প্রকৃতিরই একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমার কাজ হলো ছায়া দেওয়া, আশ্রয় দেওয়া, আর প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করা।

বর্তমান ও ভবিষ্যৎঃ

আজ আমি এক বিশাল প্রাচীন বটবৃক্ষ। আমার শরীরে বয়সের ছাপ স্পষ্ট, কিন্তু আমার মন এখনও সবুজ। আমি চাই আরও অনেক যুগ বেঁচে থাকতে, প্রকৃতির সেবা করতে।

উপসংহারঃ

আমি এক নীরব সাক্ষী, কালের গতিপথের সাক্ষী। আমার মধ্যে লুকিয়ে আছে কত ইতিহাস, কত গল্প। আমি শুধু প্রকৃতির অংশ নই, আমি প্রকৃতির প্রতিচ্ছবি।

Post a Comment

Leave your thoughts in the comments, and we will reply to you very soon!