ABTA Madhyamik 2025 History Page No - 48 Test Paper Solved

ABTA Madhyamik 2025 History টেস্ট পেপার পৃষ্ঠা ৪৮-এর সমাধান এখানে পান। সহজ ব্যাখ্যা ও সঠিক উত্তরের জন্য এই সমাধানটি অনুসরণ করুন।

HISTORY

বিভাগ- ‘ক’

১। সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো

1.1) বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়-

  • (ক) ৮ জানুয়ারি
  • (খ) ২৪ ফেব্রুয়ারি
  • (গ) ৮ মার্চ
  • (ঘ) ৫ জুন

উত্তরঃ (ঘ) ৫ জুন

1.2) দাদাসাহেব ফালকে যুক্ত ছিলেন-

  • (ক) চলচ্চিত্রের সঙ্গে
  • (খ) ক্রীড়াজগৎয়ের সঙ্গে
  • (গ) স্থানীয় ইতিহাস চর্চার সঙ্গে
  • (ঘ) পরিবেশ ইতিহাস চর্চার সঙ্গে

উত্তরঃ (ক) চলচ্চিত্রের সঙ্গে

1.3) 'প্রথম সরকারি শিক্ষা কমিশন' (হান্টার কমিশন) গঠিত হয়-

  • (ক) ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে
  • (খ) ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে
  • (গ) ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে
  • (ঘ) ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে

উত্তরঃ (গ) ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে

1.4) 'বামাবোধিনী' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন-

  • (ক) উমেশচন্দ্র দত্ত
  • (খ) শিশিরকুমার ঘোষ
  • (গ) কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার
  • (ঘ) দ্বারকনাথ বিদ্যাভূষণ

উত্তরঃ (ক) উমেশচন্দ্র দত্ত

1.5) 'সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শ' প্রচার করেছিলেন-

  • (ক) বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী
  • (খ) স্বামী বিবেকানন্দ
  • (গ) শ্রীরামকৃষ্ণ
  • (ঘ) কেশবচন্দ্র সেন

উত্তরঃ (গ) শ্রীরামকৃষ্ণ

1.6) 'ভাগনাডিহিতে' যে বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল-

  • (ক) ভিল বিদ্রোহের
  • (খ) সাঁওতাল বিদ্রোহের
  • (গ) মোপলা বিদ্রোহের
  • (ঘ) রংপুর বিদ্রোহের

উত্তরঃ (খ) সাঁওতাল বিদ্রোহের

1.7) 'সন্ন্যাসী বিদ্রোহের' একজন বিখ্যাত নেতা ছিলেন-

  • (ক) ভবানী পাঠক
  • (খ) কালিচরণ
  • (গ) বিষ্ণুচরণ বিশ্বাস
  • (ঘ) বীরসা মুণ্ডা

উত্তরঃ (ক) ভবানী পাঠক

1.8) 'বন্দেমাতরম' সঙ্গীতটি রচিত হয়-

  • (ক) ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে
  • (খ) ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে
  • (গ) ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে
  • (ঘ) ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে

উত্তরঃ (গ) ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে

1.9) মহাবিদ্রোহের সময় 'দিল্লির মোঘল সম্রাট' ছিলেন-

  • (ক) দ্বিতীয় শাহ আলম
  • (খ) দ্বিতীয় আকবর শাহ
  • (গ) ফারুশিয়র
  • (ঘ) দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ

উত্তরঃ (ক) দ্বিতীয় শাহ আলম

1.10) 'অস্ত্র আইন' পাশ করেন-

  • (ক) ওয়ারেন হেস্টিংস
  • (খ) লর্ড লিটন
  • (গ) কর্ণওয়ালিশ
  • (ঘ) ওয়েলসলি

উত্তরঃ (খ) লর্ড লিটন

1.11) ভারতে 'হাফটোন প্রিন্টিং পদ্ধতি' প্রবর্তন করেন-

  • (ক) উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
  • (খ) সুকুমার রায়
  • (গ) পঞ্চানন কর্মকার
  • (ঘ) চার্লস উইলন্স

উত্তরঃ (ক) উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী

1.12) 'ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স'-এর যে বিজ্ঞানী নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন-

  • (ক) জগদীশচন্দ্র বসু
  • (খ) সি ভি রমন
  • (গ) প্রফুল্লচন্দ্র রায়
  • (ঘ) সত্যেন্দ্রনাথ বসু

উত্তরঃ (খ) সি ভি রমন

1.13) 'মোপলা বিদ্রোহ' (১৯২১) হয়েছিল-

  • (ক) মালাবার উপকূলে
  • (খ) কোঙ্কন উপকূলে
  • (গ) গোদাবরী উপত্যকায়
  • (ঘ) তেলেঙ্গানা অঞ্চলে

উত্তরঃ (ক) মালাবার উপকূলে

1.14) 'লাঙল যার জমি তার'- এই স্লোগান যে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত তা হলো-

  • (ক) তেভাগা আন্দোলন
  • (খ) তেলেঙ্গানা আন্দোলন
  • (গ) একা আন্দোলন
  • (ঘ) পুন্নাপ্রা ভায়লার আন্দোলন

উত্তরঃ (ক) তেভাগা আন্দোলন

1.15) ভারতে 'প্রথম মে দিবস' পালিত হয়-

  • (ক) ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে
  • (খ) ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে
  • (গ) ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে
  • (ঘ) ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে

উত্তরঃ (ঘ) ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে

1.16) 'দীপালি সংঘ' প্রতিষ্ঠা করেন-

  • (ক) কল্পনা দত্ত
  • (খ) লীলা নাগ (রায়)
  • (গ) বাসন্তী দেবী
  • (ঘ) বীনা দাস

উত্তরঃ (খ) লীলা নাগ (রায়)

1.17) কোন্ বিপ্লবী 'পি এন ঠাকুর' ছদ্মনামে জাপানে পালিয়ে যান-

  • (ক) বসন্ত বিশ্বাস
  • (খ) সুভাষচন্দ্র বোস
  • (গ) রাসবিহারী বসু
  • (ঘ) অরবিন্দ ঘোষ

উত্তরঃ (গ) রাসবিহারী বসু

1.18) 'নমঃশূদ্র আন্দোলন' শুরু করেন-

  • (ক) হরিচাঁদ ঠাকুর
  • (খ) যোগেন মণ্ডল
  • (গ) গুরুচাঁদ ঠাকুর
  • (ঘ) প্রমথরঞ্জন ঠাকুর

উত্তরঃ (ক) হরিচাঁদ ঠাকুর

1.19) 'ভাষাভিত্তিক গুজরাট' রাজ্যটি গঠিত হয়-

  • (ক) ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে
  • (খ) ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে
  • (গ) ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে
  • (ঘ) ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে

উত্তরঃ (গ) ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে

1.20) 'ভারতের প্রধান রাষ্ট্রভাষা' হল -

  • (ক) হিন্দি
  • (খ) বাংলা
  • (গ) ইংরাজি
  • (ঘ) মারাঠি

উত্তরঃ (ক) হিন্দি

Related Posts

বিভাগ-‘খ’

২। কোনো যোলোটি প্রশ্নের উত্তর দাও (প্রতিটি উপবিভাগ থেকে অন্তত ১টি করে প্রশ্নের উত্তর দাও)

(উপবিভাগ ২.১) একটি বাক্যে উত্তর দাও

২.১.১) সরলাদেবী চৌধুরানীর আত্মজীবনী গ্রন্থের নাম কি?

উত্তরঃ জীবনের ঝরাপাতা

২.১.২) 'শ্রীরামপুর ত্রয়ী' কারা ছিলেন?

উত্তরঃ উইলিয়াম কেরি, উইলিয়াম ওয়ার্ড, মার্শম্যান

২.১.৩) 'উলগুলান' বলতে কি বোঝায়?

উত্তরঃ বিপদজনক অবস্থা বা চরম বিশৃঙ্খলা

২.১.৪) ভারতের 'প্রথম শ্রমিক সংগঠন' কোনটি?

উত্তরঃ মাদ্রাজ লেবার ইউনিয়ন (১৯১৮)

(উপবিভাগ ২.২) ঠিক বা ভুল নির্ণয় করো:

২.২.১) ১৯১১ সালে 'মোহনবাগান' দল ইংরেজদের হারিয়ে আই.এফ.এ শিল্ড জয় করে।

উত্তরঃ ঠিক

২.২.২) 'গোরা' উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইউরোপীয় সমাজকে সমর্থন করেছিলেন।

উত্তরঃ ভুল

২.২.৩) 'গিরনি কামগার ইউনিয়ন' গড়ে উঠেছিল বোম্বাইতে।

উত্তরঃ ঠিক

২.২.৪) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যঙ্গ করে বলা হত- 'গোলদীঘির গোলামখানা'।

উত্তরঃ ঠিক

(উপবিভাগ ২.৩) ‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মেলাও

উত্তরঃ

‘ক’ স্তম্ভ ‘খ’ স্তম্ভ
২.৩.১ এশিয়াটিক সোসাইটি (২) উইলিয়াম জোন্স
২.৩.২ তেলেঙ্গানা আন্দোলন (৩) ইয়ালো রেড্ডি
২.৩.৩ ভাইকম সত্যাগ্রহ (৪) শ্রী নারায়ণ গুরু
২.৩.৪ 'একা' আন্দোলন (১) মাদারি পাশি
(উপবিভাগ ২.৫) নিম্নলিখিত বিবৃতিগুলির সঙ্গে সঠিক ব্যাখ্যাটি নির্বাচন করো

২.৫.১) বিবৃতি: উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের ব্যাপ্তি ছিল খুবই সীমিত।

  • ব্যাখ্যা ১: কারণ শুধুমাত্র গ্রামবাংলায় নবজাগরণ হয়েছিল।
  • ব্যাখ্যা ২: কারণ এই নবজাগরণ সীমিত ছিল শুধুমাত্র সাহিত্যের ক্ষেত্রে।
  • ব্যাখ্যা ৩: কারণ এই নবজাগরণ শুধুমাত্র পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত প্রগতিশীল সমাজের মধ্যে সীমিত ছিল।

উত্তরঃ ব্যাখ্যা ৩: কারণ এই নবজাগরণ শুধুমাত্র পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত প্রগতিশীল সমাজের মধ্যে সীমিত ছিল।

২.৫.২) বিবৃতি: ভারত সরকার ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা শুরু করে।

  • ব্যাখ্যা ১: এর উদ্দেশ্য ছিল বিপ্লবীদের দমন করা।
  • ব্যাখ্যা ২: এর উদ্দেশ্য ছিল আইন অমান্য আন্দোলন করা।
  • ব্যাখ্যা ৩: এর উদ্দেশ্য ছিল দেশব্যাপী সাম্যবাদী কার্যকলাপ দমন করা।

উত্তরঃ ব্যাখ্যা ৩: এর উদ্দেশ্য ছিল দেশব্যাপী সাম্যবাদী কার্যকলাপ দমন করা।

২.৫.৩) বিবৃতি: ইতিহাসে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের নাম স্মরণীয়।

  • ব্যাখ্যা ১: চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের জন্য।
  • ব্যাখ্যা ২: চট্টগ্রামের পাহাড়তলির ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণের দায়িত্ব পালনের জন্য।
  • ব্যাখ্যা ৩: ঢাকায় ইডেন কলেজের সমাজ সেবার কাজে যুক্ত থাকার জন্য।

উত্তরঃ ব্যাখ্যা ১: চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের জন্য।

২.৫.৪) বিবৃতি: অস্পৃশ্যতা দূরীকরণ নিয়ে গান্ধী-আম্বেদকর বিতর্ক ছিল।

  • ব্যাখ্যা ১: গান্ধীজি দলিতদের সার্বিক উন্নয়নের কোনো চেষ্টা করেননি।
  • ব্যাখ্যা ২: গান্ধীজি মনে করতেন যে, আম্বেদকরের আন্দোলনের ফলে জাতিভেদ প্রথা আরো বাড়বে।
  • ব্যাখ্যা ৩: গান্ধীজি দলিতদের আন্দোলনকে ঔপনিবেশিক শক্তির অপকৌশল বলে মনে করতেন।

উত্তরঃ ব্যাখ্যা ৩: গান্ধীজি দলিতদের আন্দোলনকে ঔপনিবেশিক শক্তির অপকৌশল বলে মনে করতেন।

Related Posts

বিভাগ-‘গ’

৩। দুটি অথবা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও: (যে কোনো ১১টি)

৩.১) আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চা গুরুত্বপূর্ণ কেন?

আধুনিক ইতিহাসচর্চায় আঞ্চলিক বা স্থানীয় ইতিহাসের গুরুত্ব অপরিসীম।

ইতিহাসচর্চায় আঞ্চলিক বা স্থানীয় ইতিহাসের গুরুত্বঃ

  • ধারাবাহিকতাঃ স্থানীয় ইতিহাসে স্থানীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত চালচিত্র তুলে ধরা হয়।
  • উপাদানঃ জাতীয় হরের ইতিহাস রচনার সময়ে অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় ইতিহাসকে উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
  • সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা জানতে সাহায্যঃ স্থানীয় ইতিহাস কোনো অঞ্চলের রাজনৈতিক উত্থানপতন ও জনগোষ্ঠী সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে।

৩.২) ফটোগ্রাফ কিভাবে আধুনিক ইতিহাস চর্চার উপাদান হয়ে উঠেছে?

১৯৯০-এর দশক থেকে ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে ফোটোগ্রাফির ব্যবহার ব্যাপক মাত্রা পেয়েছে। গবেষকগণ এই বিষয়টিকে ইতিহাসের 'Visual Turn' বলে থাকেন।

কারণঃ

  • ফটোগ্রাফ অতীতের ঘটনাবলির ছবহু প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে।
  • সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ইতিহাসে বর্ণময়তা আনে ফটোগ্রাফের ব্যবহার।

এই কারণে আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে উঠেছে।

৩.৩) 'হাজি মহম্মদ মহসীন' স্মরণীয় কেন?

হাজি মহম্মদ মহসিনঃ

হাজি মহম্মাদ মহসিন ছিলেন বাংলার একজন ধর্মপ্রাণ ও মহান জনহিতৈষী ব্যক্তি। তাঁর বিশাল সম্পত্তি বিভিন্ন সৎ ও উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর সরকার মহসিন ফান্ড তৈরি করে তাঁর সঞ্চিত অর্থ নানা জনহিতকর কাজে ব্যয় করে চলেছে।

৩.৪) 'তিন আইন' কী?

উনিশ শতকে বাংলায় সমাজসংস্কার আন্দোলনের জোয়ার এসেছিল। রাজা রামমোহন রায় ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্মসমাজ-এর আন্দোলন এসময় বিশেষ সাফল্য লাভ করেছিল। পরবর্তীকালে কেশবচন্দ্র সেনের উদ্যেগে ব্রাহ্মসমাজের আন্দোলনে গতির সঞ্চার হয়েছিল।

তিন আইনঃ

  • কেশচন্দ্র সেনের সক্রিয় আন্দোলনের ফলে ব্রিটিশ সরকার ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে একটি আইন পাস করে। এটি তিন আইন নামে পরিচিত।
  • এই আইন পাসের ফলে বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ নিষিদ্ধ এবং অসবর্ণ বিবাহ আইনসিদ্ধ হয়। ধীরে ধীরে হিন্দুসমাজের কুসংস্কারগুলি বিলুপ্ত হতে থাকে এবং মহিলা ও সাধারণ মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।

৩.৫) 'ফরাজি আন্দোলন' কী নিছক ধর্মীয় আন্দোলন ছিল?

উনিশ শতকে ভারতে মুসলমানদের মধ্যে ইসলামের পুনরুজ্জীবন নিয়ে যে আন্দোলন চলেছিল, তা পূর্ব বাংলায় ফরাজি আন্দোলন নামে পরিচিত হয়।

আন্দোলনের প্রকৃতি: ফরাজি আন্দোলনের প্রকৃতি সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।

  • ধর্মীয় সংস্কারঃ ইসলাম ধর্মের শুদ্ধতা রক্ষা, প্রয়োজনীয় সংস্কারসাধন, সামাজিক কুসংস্কার দুরীকরণ এবং ইসলাম ধর্মের বিশ্বজনীন আবেদন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই আন্দোলন শুরু হয়।
  • কৃষক আন্দোলনঃ ধর্মীয় রঙের ছোঁয়া লাগলেও এই আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি ছিল কৃষকদের ক্ষোভ ও অসন্তোষ।
  • ব্রিটিশবিরোধিতাঃ এই আন্দোলন ছিল ইংরেজ ও তার সমর্থক শ্রেণির বিরুদ্ধে পরিচালিত। ঐতিহাসিক বিনয়ভূষণ চৌধুরী বলেছেন, ফরাজি আন্দোলন মূলত প্রতিবাদী ধর্ম আন্দোলন হিসেবে দেখা দিলেও শেষ বিচারে কৃষক কান্দোলনের ব্যাপ্তি লাভ করেছিল।

৩.৬) চুয়াড় বিদ্রোহের (১৭৯৮-১৭৯৯) গুরুত্ব কী ছিল?

চুয়াড় বিদ্রোহের গুরুত্বঃ চুয়াড় বিদ্রোহের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

  • বিদ্রোহী জমিদারদের সঙ্গে সরকারের আপসঃ ব্রিটিশ সরকার সেনাবাহিনীর সাহায্যে চুয়াড় বিদ্রোহ দমন করতে না পেরে বিদ্রোহী জমিদারদের সঙ্গে আপস করেছিল।
  • জঙ্গলমহল জেলা গঠনঃ ব্রিটিশ সরকার চুয়াড় বিদ্রোহ প্রভাবিত এলাকাগুলিকে নিয়ে ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে ১৯৮ নং রেগুলেশন জারি করে জঙ্গলমহল জেলা গঠন করে। বাঁকুড়াকে জঙ্গলমহল জেলার সদর দফতর করা হয়।
  • কৃষক বিদ্রোহে প্রেরণাদানঃ এই বিদ্রোহ আগামী দিনের কৃষক বিদ্রোহে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল।

৩.৭) 'জমিদার সভা' কারা কবে প্রতিষ্ঠা করেন?

উনিশ শতকের বাংলায় যেসব রাজনৈতিক সভাসমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, জমিদার সভা ছিল তার মধ্যে অন্যতম।

  • প্রতিষ্ঠাঃ কলকাতার বিশিষ্ট জমিদাররা নিজেদের স্বার্থে এই সভা প্রতিষ্ঠা করেন। পরে এই সভার নাম হয় ল্যান্ডহোল্ডার্স সোসাইটি (Landholder's Society)।
  • প্রতিষ্ঠাকালঃ ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দের ১২ নভেম্বর জমিদার সভা প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • প্রতিষ্ঠাতাঃ রাজা রাধাকান্ত দেব, প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ও প্রসন্নকুমার ঠাকুর এই সভার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

৩.৮) নানা সাহেব কেন বিখ্যাত?

ভারত ইতিহাসে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এই বিদ্রোহে দেশীয় রাজন্যবর্গ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন।

নানাসাহেবের ভূমিকাঃ

  • মারাঠা পেশোয়া দ্বিতীয় বাজিরাও-এর দত্তকপুর ছিলেন নানাসাহেব। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ চলাকালীন লর্ড ডালহৌসি নানাসাহেবের পেশোয়া পদ বিলুপ্ত করেন এবং তাঁর বার্ষিক বৃত্তি বন্ধ করে দেন।
  • এর প্রতিবাদে নামাসাতের বিদ্রোহে যোগদান করেন। কানপরে নানাসাহেবের পক্ষে তাঁতিয়া তোশি ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে সাময়িকভাবে তাদের বিতাড়িত করেছিলেন।

৩.৯) 'চার্লস উইলকিন্স' কে ছিলেন?

বাংলার মুদ্রণ জগতের ইতিহাসে চার্লস উইলকিনস-এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

অবদানঃ

  • বাংলা হরফ প্রবর্তনঃ বড়োলোট ওয়ারেন হেস্টিংস-এর নির্দেশে কোম্পানির কেরানি চার্লস উইলকিনস হ্যালহেডের বাংলা ব্যাকরণ বই ছাপানোর দায়িত্ব নেন। ত্রিবেণীর বিখ্যাত হরফনির্মীতা পঞ্চানন কর্মকার উইলকিনসের নির্দেশমতো বাংলা হরফ তৈরি করেন। এরপর উইলকিনস চুঁচুড়ায় ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করে বাংলা হরফের ব্যাকরণ গ্রন্থ এ গ্রামার অফ দ্য বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রকাশ করেন।

এভাবে বাংলা হরফ তৈরি বরিয়ে বাংলা ভাষার ব্যাকরণ প্রকাশনায় মধ্য দিয়ে চার্লস উইলকিনস বাংলা ভাষার বিকাশে বিশেষ অবদান রেখে গিয়েছেন।

৩.১০) 'জাতীয় শিক্ষা পরিষদ' গঠনের উদ্দেশ্য কী ছিল?

জাতীয় শিক্ষা পরিষদঃ ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ১১ মার্চ জাতীয় শিক্ষা পরিষদ স্থাপিত হয়।

জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গড়ে ওঠার উদ্দেশ্য:

  • স্বাদশিয়ানাঃ বঙ্গভঙ্গবিরোধী স্বদেশি আন্দোলনে আত্মশক্তি বিকাশের উপর জোর দেওয়া হয়। জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠন ছিল তারই অঙ্গ।
  • ঔপনিবেশিক শিক্ষার বিকল্পঃ ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি দূর করে জাতীয় আদর্শে শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয় এই জাতীয় শিক্ষা পরিষদের মাধ্যমে।
  • স্বীকৃতিঃ ইংরেজ সরকার বিশ্ববিদ্যালয় অইিন পাস করে বেসরকারি কলেজ গুলির স্বীকৃতি বাতিল করে।

এই সমস্ত কারণে স্বদেশি নেতৃত্ব বিকল্প শিক্ষার লক্ষ্যে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ১১ মার্চ প্রতিষ্ঠা করে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ।

৩.১১) তেভাগা আন্দোলনের দাবি কী ছিল?

তেভাগা আন্দোলনের প্রধান দাবিসমূহঃ ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় সংঘটিত তেভাগা আন্দোলনের বিভিন্ন দাবি ছিল। যথা

  • তেভাগা আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি ছিল উৎপন্ন ফসলের ২/৩ ভাগ তাদের দিতে হবে।
  • জমিতে ভাগচাষিদের দখলিয়ত্ব দিতে হবে।
  • ভাগচাষির খামারে ধান তুলতে হবে।
  • ভাগচাষির ধান বুঝে নিয়ে জমির মালিক রসিদ দেবে ইত্যাদি।

৩.১২) 'ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

মার্কসের মতবাদ শোষিত-নিপীড়িত-শ্রমজীবী মানুষকে শোষণমুক্তির দিশা দেখায় এবং শ্রেণিসংগ্রামের প্রেরণা জোগায়। ভারতেও বামপন্থীরা ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে শ্রমজীবীদের শোষণমুক্তির উদ্দেশ্যে, ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্ট (WPP) গঠন করেন।

  • প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যঃ ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ১৭ অক্টোবর রাশিয়ার তাসখন্দে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির জন্ম হয়। তারপর ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে কানপুরে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে ওঠে। ইংরেজ সরকারের দমননীতি থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য ভারতের কমিউনিস্ট নেতারা গোলনে তাদের কার্যকলাপ পরিচালনা করতে থাকেন। তারা শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে বামপন্থী মতাদর্শ প্রচার ও তাদের সংগঠিত করার জন্য ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি-কে হাতিয়ার করেন। এই সংগঠন শ্রেণিসংগ্রাম, বিনা ক্ষতিপূরণে জমিদারি প্রথা ভেলাপ, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, সংবাদপত্রের বাস্ত্রাধীনতা, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ইত্যাদির দাবি তুলেছিল।

এই সংগঠনের হাত ধরে কমিউনিস্ট পার্টি তার সংগঠন বৃদ্ধি করতে সচেষ্ট হয়।

৩.১৩) 'অলিন্দযুদ্ধ' বলতে কী বোঝ?

অলিন্দ যুদ্ধঃ

  • মহাকরণ অভিযানঃ ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৮ ডিসেম্বর বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলের তিন বিপ্লবী বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত মহাকরণ অভিযান করেন। তাঁরা সিম্পসন ও ক্রেগকে গুলি করে হত্যা করেন।
  • প্রতিরোধঃ টেগাটের পুলিশবাহিনী মহাকরণ ঘিরে ফেললে দুই পক্ষে গুলিবিনিময় হয়। এই গুলিবিনিময়ের ঘটনা অলিন্দ যুদ্ধ নামে পরিচিত।

৩.১৪) 'অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি কী?

১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গবিরোধী স্বদেশি আন্দোলনের সময় সরকার ছাত্রসমাজের উপর দমনপীড়নের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সার্কুলার জারি করে। এর বিরুদ্ধে আঅ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয় (১৯০৫ খ্রি., ৪ নভেম্বর)।

অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি:

  • গোলদিঘিতে ব্রাহ্মনেতা কৃষ্ণকুমার মিত্রের বাড়িতে অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি গঠিত হয়। ছাত্রনেতা শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু এক প্রকাশ্য ছাত্র সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল কার্লাইল সার্কুলারের আদেশ তারা মেনে চলবে না।
  • ইতিমধ্যে কার্লাইল সার্কুলারের অভিঘাতে যেসমস্ত ছাত্র স্কুলছুট বা স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিল তাদের শিক্ষার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা এবং এজন্য স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করা এই সমিতির উদ্দেশ্য ছিল।

এই সমিতি তার উদ্দেশ্যপূরণের জন্য জাতীয় শিক্ষা পরিষদ এবং বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে।

৩.১৫) 'স্যার সিরিল র‍্যাডক্লিফ' কেন বিখ্যাত?

স্যার সিরিল র‍্যাডক্লিফ ছিলেন বিশিষ্ট ব্রিটিশ আইনজীবী। লর্ড মাউন্টব্যাটেন ভারত বিভাগের সময় যে সীমানা কমিশন গঠন করেছিলেন, ব্লাডক্লিফ ছিলেন তার সভাপতি।

বিখ্যাত হওয়ার কারণঃ

  • সিরিল র‍্যাডক্লিফ অতি অল্প সময়ের মধ্যে ভারত বিভাজনের মানচিত্র তৈরি করেছিলেন।
  • তাঁর নামানুসারে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত ‍র‍্যাডক্লিফ লাইন নামে পরিচিত হয়।

৩.১৬) 'পট্টি শ্রীরামুলু' কে ছিলেন?

অন্ধ্র অঞ্চলে ভাষাভিত্তিক প্রদেশ গঠনের দাবিতে আমরণ অনশন করে অমর হয়েছেন পাত্তি শ্রীরামালু।

সস্মরণীয় হওয়ার কারণঃ

  • ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ১৯ অক্টোবর তেলুগু ভাষাভাষীদের জন্য স্বতন্ত্র অন্তপ্রদেশ গঠনের জন্য দাবি তুলে তিনি আমরণ অনশন শুরু করেন। ৫৮ দিন অনশনের পর তাঁর মৃত্যু হয়।
  • তাঁর মৃত্যুর পর অন্ধ্রপ্রদেশ-এর দাবিতে প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়।
  • এর ফলস্বরূপ, ভারত সরকার ১৮ ডিসেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশ নামে রাজ্য গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের ১ অক্টোবর অস্ত্রপ্রদেশ রাজ্য গঠিত হয়।

ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের দাবিতে তাঁর এই আন্দোলনের জন্য পাত্তি শ্রীরামালুকে অমরক্ষীবী উপাধি দেওয়া হয়।

‘উপবিভাগ ২.৪’ ‘বিভাগ ঘ’ এবং ‘বিভাগ ঙ’- এর প্রশ্ন উত্তর খুব শীঘ্রই এখানে প্রদান করা করা হবে।

Post a Comment

Leave your thoughts in the comments, and we will reply to you very soon!