দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা | Science in Daily Life Essay in Bengali

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান

ভূমিকা : বর্তমান যুগকে বলা হয় আধুনিক বিজ্ঞানের যুগ। বিজ্ঞান আমাদের কাছে অপরিহার্য। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান ছাড়া কল্পনাও করা যায় না। সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে, রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত যাবতীয় কাজকর্মের জন্য বিজ্ঞানের অবদান লক্ষণীয়।

বিজ্ঞানের জয়যাত্রা : আদিম মানুষের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ছিল আগুন জ্বালাতে শেখা। মানুষের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার চাকা। আর যে আবিষ্কারের সুবাদে মানুষ অসাধ্য সাধন করতে পেরেছে তা হল বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ আবিষ্কারের কাজে লাগিয়ে মানুষ অনেক নিত্যনূতন সামগ্রী আবিষ্কার করতে লাগল। দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের অবদান একে একে স্থান করে নিল।

প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞান : আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত প্রায় প্রতিটি জিনিসই বিজ্ঞানের দান। বাড়ি তৈরির প্রয়োজনীয় জিনিস বা বাড়িতে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক বস্তুগুলি যেমন – পাখা, লাইট, টিভি, ফোন, কুকার ইত্যাদি সবকিছুর মূলে রয়েছে বিজ্ঞান। এইসব বস্তুগুলি আধুনিক জীবনকে সহজতর করে তুলেছে।

চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান : চিকিৎসাক্ষেত্রেও বিজ্ঞান কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে। আগে যেসব রোগে মানুষ মারা যেত, এখন সে সমস্ত রোগের ওষুধ আবিষ্কার হওয়ার ফলে মানুষের গড় আয়ু অনেক বেড়ে গেছে। তাছাড়া বিভিন্ন রকম যন্ত্রপাতি আবিষ্কারের ফলে রোগ নির্ণয় করাও সহজ হয়েছে।

কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে বিজ্ঞান : উচ্চফলনশীল বীজ, রাসায়নিক সার, কীটনাশক এবং অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আবিষ্কার হওয়ার ফলে কৃষিক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এসেছে। শিল্প কারখানায় উন্নতমানের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে কম খরচে বেশি পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে।

শিক্ষাক্ষেত্রে বিজ্ঞান : বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে শিক্ষা ব্যবস্থাতেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। সাধারণ ক্লাসরুমকে স্মার্ট ক্লাস রুম করা হচ্ছে। ইন্টারনেট ব্যবস্থার উন্নতির ফলে এখন ছাত্রছাত্রীরা ঘরে বসে অনলাইন কোচিং নিতে পারছে। অনলাইন টেস্টও দিতে পারছে।

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি : বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে পাল্লা দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থাতেও চরম উন্নতি সাধিত হয়েছে। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে পৌঁছাতে হলে মানুষের কাছে দূরত্বটা আর কোনো বাধা নয়। তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রেও বিজ্ঞান আজ আমাদের চরম শিখরে পৌঁছে গেছে। ফোনের যুগ পেরিয়ে আমরা আজ পৌঁছে গেছি স্মার্ট ফোনের যুগে। হাতে থাকা স্মার্ট ফোন মানুষকে বিশ্বের সাথে যুক্ত করেছে।

বিনোদনের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান : আনন্দ-বিনোদনে বিজ্ঞান একটা অফুরন্ত ভাণ্ডার এনে দিয়েছে। আনন্দ বিনোদনের নানান সামগ্রী যেমন – ভিডিও গেম, টিভি, মিউজিক সিস্টেম ইত্যাদি সবকিছুই বিজ্ঞানের দান।

উপসংহার : বর্তমান যুগে মানুষ বিজ্ঞানের আশীর্বাদে জীবনকে করেছে আরামপ্রদ ও সুন্দর। বিজ্ঞান দৈনন্দিন জীবনে আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। বিজ্ঞান আজ মানুষের বন্ধু, পথপ্রদর্শক, সেবক। একথা ভাবলে শিউরে উঠতে হয় যে, বিজ্ঞান না থাকলে এই গতিময় বিশ্বে আমরা বাঁচবো কী করে!